জরুরী কিছু ক্ষেত্র ছাড়া বাকী সব সময়ই নারীদের কণ্ঠ শোনা শরীয়ত সিদ্ধ নয়। সেটা কোরআন তেলাওয়াত করা হলেও পরপুরুষের শোনা জায়েজ না। এতে কোরআন শরীফের মাহাত্মের তুলনায় অনেক শ্রোতার ক্ষেত্রে নারীর কণ্ঠ প্রাধান্য বলে বিবেচিত হতে পারে, নারী কণ্ঠের আকর্ষণ সে অনুভব করতে পারে এজন্যই এটা না-জায়েজ। আর নারীদের জন্য নিজেদের মহলে উচ্চকণ্ঠে তেলাওয়াত করা বা কথা বলায় কোন বিধিনিষেধ নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক, ইউটিউবে বা যে কোনো প্রচার মাধ্যমে প্রকাশ করাও নারীর জন্য উচিত না। আর তা প্রকাশ করা হলেও পুরুষের জন্য তা শোনা উচিত না। দ্বিতীয়ত, নারীদের কোরআন তিলাওয়াতের বিষয়টি প্রদর্শনের বিষয় নয়। যদি এটা প্রচারের উদ্দেশ্যে হয়ে থাকে, তবে এই কাজটি বড় ধরনের ফেতনা (প্রত্যের কাজের ফলাফল নিয়তের ওপর নির্ভরশীল)।
আল্লাহ তায়ালা প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে পরপুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষনীয় ভঙ্গিতে কথা বলতে নিষেধ করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে নবী পত্নীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মতো নও; যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তবে পরপুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষনীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না, ফলে সেই ব্যক্তি কু-বাসনা করে, যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে, তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হবে। বরং তোমরা সঙ্গত কথাবার্তা বলবে। (সূরা আহযাব: ৩২)।
হযরত আয়েশা (রাঃ) এর নিকট মাসয়ালা বা হাদিসের প্রয়োজনে অন্যান্য সাহাবীগণ আসলে, তিনি মুখের ওপর হাত রেখে কণ্ঠ বিকৃত করে পর্দার আড়ালে থেকে কথা বলতেন। যেন কারো অন্তর ব্যাধিগ্রস্থ না হয়।
ইমাম ইবনুল জাওযি (রঃ) বলেন, গায়রে মাহরাম মহিলার গান গজল সঙ্গীত শ্রবণ করার ব্যাপারে শাওয়াফিগণ বলেন, গায়রে মাহরাম মহিলার গান শ্রবণ করা জায়েয নেই চাই সে স্বাধীন মহিলা হোক অথবা দাসী।
তিনি বলেন, ইমাম শাফেয়ী (রঃ) বলেছেন, যে গায়িকার মালিক গান শোনানোর জন্য লোকদের একত্রিত করে সে অজ্ঞ তার সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি আরো কঠোর ভাষায় বলেন, সে দাইউস। (তালবিসে ইবলিস: ২৭৭)।
ইমাম ইবনুল কাইয়্যুম (রঃ) বলেন বলেন, আজনবী মহিলার গান গজল শ্রবণ করা সর্বাপেক্ষা হারাম কাজ এবং দ্বীনের সবচেয়ে দূষিত বিষয়। (ইগাসাতুল লুহফান: ১/২৩০)।
শাইখ ইবনে উছাইমিন (রঃ) বলেন, আমার মতামত হলো এটা হারাম যে, উপবিষ্ট পুরুষদের সম্মুখে মহিলাদের আওয়াজ উচু হবে এবং তারা তাদের আওয়াজ শ্রবণ করে স্বাদ উপভোগ করবে। (আল লিকাউস সাহরী: ৫৫)।
ইমাম খরাশী (রঃ) বলেন, যে মহিলার আওয়াজ শুনে স্বাদ উপভোগ করার আশঙ্কা রয়েছে তার আওয়াজ উচু করা জায়েজ নেই। মৃত ব্যক্তির জন্য ক্রন্দন করার ক্ষেত্রেও জায়েজ নেই, এবং বিবাহের ভোজ আয়োজনেও জায়েজ নেই। (শরহে মুখতাছার খলিল: ১/২৭৬)।
0 Comments